যশরাজ ফিল্মসের ‘গুন্ডে’ ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করার
পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও ব্লগে। পাশাপাশি আইএমডিবি সাইটে কড়া মন্তব্য
করে রিভিউ লিখেছেন অসংখ্য মানুষ। শুধু তা-ই নয়, এই মুহূর্তে আইএমডিবি
রেটিংয়ে সর্বনিম্ন পয়েন্ট ‘গুন্ডে’ ছবির দখলে। মাত্র ১.২ পয়েন্ট পেয়ে
আইএমডিবি বটম হান্ড্রেড চার্টের এক নম্বরে অবস্থান করছে ‘গুন্ডে’ ছবিটি। ২ ও
৩ নম্বরে রয়েছে হলিউডের দুই ছবি ‘ফাইনাল জাস্টিস’ (১৯৮৫) ও ‘দ্য হটি
অ্যান্ড দ্য নটি’ (২০০৮)।
আইএমডিবি সাইটে ঢাকা থেকে অনীক তাঁর ‘বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তনের পাঁয়তারা’ শিরোনামের রিভিউয়ে লিখেছেন, ‘এটা খুবই নিম্নমানের একটি চলচ্চিত্র যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি। পাকিস্তান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের আপামর জনগণ। এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সাহায্য করেছিল। কিন্তু মূল যুদ্ধটা করেছিল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ভেবে পাই না, বলিউডে কীভাবে এমন জঘন্য একটি ছবি নির্মিত হলো! এমন বাজে একটি ছবি দেখে সবাইকে সময় নষ্ট না করার পরামর্শ রইল আমার পক্ষ থেকে।’
কানাডা থেকে তানভীর লিখেছেন, ‘ছবিটির মাধ্যমে মিথ্যা ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে দর্শককে ভুল পথে পরিচালনা করবে। এমন বড় বাজেটের একটি ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছবিটির পরিচালকের প্রতি আমার অনুরোধ, ভবিষ্যতে কোনো ছবি নির্মাণের আগে সতর্কতার সঙ্গে ইতিহাস পড়ে নেবেন। আর তা সম্ভব না হলে কমেডি ঘরানার ছবি তৈরি করবেন।’
নিউইয়র্ক থেকে ভিকি লিখেছেন, ‘ছবিটির গল্প খুবই অশোভনভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের এক অর্থে আক্রমণই করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। কোনোভাবেই সেটাকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলা যাবে না। যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহায়তা করেছিল মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই না। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিল এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা। স্বাধীন দেশের অভ্যুদয়ের পুরো কৃতিত্বটাই তাদের। অথচ ‘গুন্ডে’ ছবির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেই পুরো কৃতিত্ব দেওয়ার হীন চেষ্টা চালিয়েছে যশরাজ ফিল্মস। এমন অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ছবি তৈরির বিষয়টি খুবই অপ্রত্যাশিত। ছবির নির্মাতাদের ধিক্কার জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি আমি।’
আইএমডিবি সাইটে ঢাকা থেকে অনীক তাঁর ‘বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তনের পাঁয়তারা’ শিরোনামের রিভিউয়ে লিখেছেন, ‘এটা খুবই নিম্নমানের একটি চলচ্চিত্র যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি। পাকিস্তান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের আপামর জনগণ। এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সাহায্য করেছিল। কিন্তু মূল যুদ্ধটা করেছিল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ভেবে পাই না, বলিউডে কীভাবে এমন জঘন্য একটি ছবি নির্মিত হলো! এমন বাজে একটি ছবি দেখে সবাইকে সময় নষ্ট না করার পরামর্শ রইল আমার পক্ষ থেকে।’
কানাডা থেকে তানভীর লিখেছেন, ‘ছবিটির মাধ্যমে মিথ্যা ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে দর্শককে ভুল পথে পরিচালনা করবে। এমন বড় বাজেটের একটি ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছবিটির পরিচালকের প্রতি আমার অনুরোধ, ভবিষ্যতে কোনো ছবি নির্মাণের আগে সতর্কতার সঙ্গে ইতিহাস পড়ে নেবেন। আর তা সম্ভব না হলে কমেডি ঘরানার ছবি তৈরি করবেন।’
নিউইয়র্ক থেকে ভিকি লিখেছেন, ‘ছবিটির গল্প খুবই অশোভনভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের এক অর্থে আক্রমণই করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। কোনোভাবেই সেটাকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলা যাবে না। যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহায়তা করেছিল মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই না। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিল এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা। স্বাধীন দেশের অভ্যুদয়ের পুরো কৃতিত্বটাই তাদের। অথচ ‘গুন্ডে’ ছবির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেই পুরো কৃতিত্ব দেওয়ার হীন চেষ্টা চালিয়েছে যশরাজ ফিল্মস। এমন অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ছবি তৈরির বিষয়টি খুবই অপ্রত্যাশিত। ছবির নির্মাতাদের ধিক্কার জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি আমি।’
যুক্তরাজ্য থেকে আকাশ শ্রীবাস্তব লিখেছেন, ‘রোম্যান্স, ব্রোম্যান্স, আর
চটুল গানের মিশেলে এক জগাখিচুড়ি তৈরি করেছেন ‘‘গুন্ডে’’ ছবির পরিচালক।
ছবিটির প্রথম আধা ঘণ্টা দেখার পর যেকোনো দর্শকই ধরতে পারবেন যে এর
চিত্রনাট্য খুবই দুর্বল। সংলাপগুলোও জঘন্য। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ছাড়া ছবিটিতে
দেখার মতো আর কিছুই নেই। ছবিটি দেখার মানে সময় এবং অর্থের অপচয় ছাড়া আর
কিছুই না।’
এমন আরও অসংখ্য নেতিবাচক রিভিউ লিখেছেন ক্ষুব্ধ দর্শকেরা। বলা যায়, এর
মধ্য দিয়ে অসত্যের বিরুদ্ধে এক অভিনব প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন
তাঁরা।
প্রসঙ্গত, যশরাজ ফিল্মসের ‘গুন্ডে’ ছবিটি বলিউডে মুক্তি পেয়েছে ১৪
ফেব্রুয়ারি। একই দিন কলকাতায়ও বাংলা ভাষায় ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আলী
আব্বাস জাফর পরিচালিত ছবিটির বাজেট ছিল ৫০ কোটি রুপি। এর বিভিন্ন চরিত্রে
অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, রণবীর সিং, অর্জুন কাপুর, ইরফান খান
প্রমুখ।
মুক্তির পরপরই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করার পাশাপাশি ইতিহাস
বিকৃতির অভিযোগ ওঠে ছবিটির বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ক্ষমাও
চাওয়া হয়েছে যশরাজ ফিল্মসের পক্ষ থেকে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্দেশে যশরাজ ফিল্মসের অফিসিয়াল ফেবসুক
পাতায় লেখা এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের ছবিতে যেভাবে
গল্প তুলে ধরা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের অনেক ভাই তাঁদের আপত্তির কথা
জানিয়েছেন। ছবিটির কাহিনি ও গল্প পুরোপুরি কাল্পনিক। কোনো জাতি, সমাজের
বিশেষ কোনো গোত্র কিংবা কোনো ব্যক্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের অভিপ্রায়
আমাদের ছিল না। তার পরও বাংলাদেশি ভাইরা যদি আমাদের কাজ দেখে আহত হন কিংবা
অশ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়েছে বলে মনে করেন, তাহলে আন্তরিকভাবে ক্ষমা
প্রার্থনা করছি আমরা।’
‘গুন্ডে’ ছবিটির শুরুর দিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ভিডিও
চিত্র দেখানোর পাশাপাশি হিন্দি ভাষায় বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ হিন্দুস্তান
ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় যুদ্ধ শেষ হয়। ৯০ হাজার পাকিস্তানি সেনা
হিন্দুস্তানের সেনাদের সামনে আত্মসমর্পণ করেন। জন্ম হয় এক নতুন দেশ,
বাংলাদেশ। ছবিটির শুরুর দৃশ্যে দেখানো হয়, ভারতীয় যোদ্ধাদের সামনে
আত্মসমর্পণ করছেন পাকিস্তানি সেনারা। আর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশের। পেছনে
দেখা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পোস্টার।
‘গুন্ডে’ ছবিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানকে দেখানো হলেও কোথাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হয়নি। এর
পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ও ব্লগে
সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই অভিযোগ করেন, ছবিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের
গৌরবোজ্জ্বল মহান মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment