একজন প্রকৃত অভিনয়শিল্পী হওয়ার বাসনা নিয়েই অভিনয়ে নিজেকে জড়িয়েছেন
মৌসুমী। সময়ের হাওয়ায় তিনি এখন একজন সফল অভিনেত্রী। সাঁঝের আলোতে যেমন
একটা মায়া থাকে, অভিনয়ের প্রতিও তেমনি মায়া কাজ করে তার মনে। তাই বরাবরই
সাহিত্যনির্ভর কাজকে প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। এটিএন বাংলায় প্রচারিত ডা.
নীহার রঞ্জন গুপ্তের উপন্যাস অবলম্বনে 'নূপুর' নামের ধারাবাহিকে 'মীরা'
চরিত্রে সুন্দর অভিনয় করে দর্শক ও পরিচালকদের মন জয় করেছিলেন। এই চরিত্রে
অভিনয় প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, 'নূপুর' ধারাবাহিকে আমি 'মীরা' চরিত্রে কাজ
করছি। আর চরিত্রের প্রয়োজনে আমাকে নাচ শেখানোর জন্য কোরিওগ্রাফার আরিফকে
আমি ধন্যবাদ জানাই। এ ধারাবাহিকে আমাকে দু'টি গেটআপে কাজ করতে হয়। অনেক
কষ্ট করেছি এ চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে।' আর সাহিত্যনির্ভর কাজকে প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, 'সাহিত্যনির্ভর কাজে প্রচণ্ড গ্ল্যামার থাকে। তাই এ ধারার কাজে
আমি খুব আনন্দ পাই। তাছাড়া সাহিত্যবিষয়ক বই আমার অবসরের সঙ্গী। আমি
ছোটবেলা থেকে বই পড়তে পছন্দ করি। শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের গল্প-উপন্যাসের কালজয়ী চরিত্রগুলো আমার চেনা ও জানা। এ কারণে এই
ধারার কাজগুলো আমাকে বেশি আকৃষ্ট করে।' তার অভিনয়ের বয়স সাত বছর। এই দীর্ঘ
সময়ে অভিনয় করেছেন অসংখ্য মান সম্পন্ন এক খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে। এরমধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো—
'নূপুর', 'তোমার দোয়ায় ভালো আছি মা', 'কাচের পুতুল',
'চৈতা পাগল', 'বাবা-মা', 'হীরক বাড়ি সোনার চুড়ি' 'সাদা মেঘ কালো মেঘ'
'মেট্রো', 'নন্দিনী', 'আমাদের সংসার', 'প্রজাপতি মন', 'মাধবী ভিলা',
'চন্দ্রমগ্ন', 'মোমের পুতুল', 'মনের জানালা','স্বপ্নচূড়া', 'অনন্যা',
'মাল্যদান', 'সাতসওদাগর', 'চুপ আদালত চলছে' 'অগ্নিপথ' প্রভৃতি। শুধু অভিনয়
নয়, মডেলিংয়ের নিজের প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন মৌসুমী। মোবাইল অপারেটর
কোম্পানিসহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছেন তিনি। মৌসুমী এখন ব্যস্ত
সময় কাটাচ্ছেন নতুন কয়েকটি ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে। মিডিয়ার সাথে তার সম্পর্ক
দীর্ঘ সময়ের এবং অভিনেত্রী হিসেবেও সফল। নিজের সফলতা সম্পর্কে মৌসুমী
বলেন, 'আমার আজকের সাফল্যের পেছনে আসলে কাজ করেছে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা।
কেননা আমি যখন যে চরিত্রে অভিনয় করি, তা সত্যিকার অর্থেই ভালোবেসে ও বেশ
যত্ন নিয়ে করেছি। আজকে আমার যে সাফল্য, তা পেতে আমাকে সময়ানুবর্তী হতে
হয়েছে।' অভিনয়ে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র নিজের ভেতর লালন করেন তিনি। মৌসুমী যে
রকম তার বাইরে চরিত্রের প্রয়োজনে নানারকম বৈশিষ্ট্যের মানুষ হয়ে উঠতে হয়
তাকে। ফলে এ বিষয়টিও দারুণ এনজয় করেন মৌসুমী। ছোটপর্দার পাশাপাশি রুপালি
পর্দাতেও নিজের নাম লিখিয়েছেন তিনি। মৌসুমী নাগ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র
'রান আউট'। তন্ময় তানসেন পরিচালিত এ ছবিতে তার বিপরীতে নায়ক হিসেবে আছেন
ছোটপর্দার ব্যস্ততম অভিনেতা সজল। ইতোমধ্যে ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। সেইসাথে
বিপ্লব হায়দার পরিচালিত 'ফিল মাই লাভ' ছবির কাজও শেষ করেছেন মৌসুমী।
ছবিটিতে তিনি চিত্রনায়ক ফেরদৌসের সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেছেন।
চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে মৌসুমী নাগ বলেন, 'দুটি ছবিতে কাজ করছি আমি। দুটিরই
গল্প চমত্কার। তবে ফিল্মি ফিল্মি ব্যাপারটা আমার মাঝে আমি পেয়েছি 'ফিল মাই
লাভ' ছবিতে কাজ করে। কারণ আমার বিপরীতে নায়ক হিসেবে পেয়েছি আমি ফেরদৌস
ভাইকে। তার একজন ভক্ত আমি।' তার ছবি দুটি মুক্তি পেলে বোঝা যাবে
চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে দর্শকরা কতটুকু তাকে গ্রহণ করে।
No comments:
Post a Comment